হেরা পঞ্চমী (Hera Panchami) কী? জানুন বিস্তারিত...
হেরা পঞ্চমী কী? এই অনুষ্ঠান কখন করা হয়?
হেরা পঞ্চমী হলো,ভারতের ওড়িশা রাজ্যের অন্তর্গত পুরী শহরে শ্রীশ্রী জগন্নাথ মন্দিরের একটি উৎসব। এই উৎসবটি রথযাত্রার পরেই হয়ে থাকে। আষাঢ় মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিটি 'হেরা পঞ্চমী' নামে পরিচিত। এটি লক্ষ্মী দেবীর উৎসব হিসেবেও বেশ পরিচিত।
হেরা অর্থ দেখা, দর্শন করা, নিরীক্ষণ করা। এই তিথিতে শ্রীমতি মহালক্ষ্মী, জগন্নাথকে দেখার জন্য গুন্ডিচা মন্দিরে যান। শ্রীশ্রী জগন্নাথ প্রভুকে ভয় দেখান যাতে অতি দ্রুত আবার নিজ মন্দিরে চলে আসেন।
আমরা জানি যে, আষাঢ় মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এই দিন শ্রীশ্রী জগন্নাথ, বলদেব ও সুভদ্রা দেবী আলাদা আলাদা রথে করে মাসির বাড়ি বেড়াতে যান। অর্থাৎ জগন্নাথ মন্দির থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে গুন্ডিচা মন্দিরে যান। কিন্তু অন্য দিকে শ্রীশ্রী জগন্নাথ দেবের, মহালক্ষ্মীর কথা মনে নেই। তিনি লক্ষ্মী দেবীকে রেখেই মাসির বাড়ি চলে যান। অর্থাৎ লক্ষ্মী দেবী মন্দিরেই থেকে যান।
এর কারণে শ্রীমতি মহালক্ষ্মী জগন্নাথের উপর ক্রুদ্ধ হন এবং গুন্ডিচা মন্দিরে একটি পালকিতে করে সুবর্ণ মহালক্ষ্মী রূপে এসে শ্রীশ্রী জগন্নাথ দেবকে ভয় দেখান। যাতে খুব শীঘ্রই জগন্নাথ মন্দিরে ফিরে যান। তখন মহালক্ষ্মীকে তুষ্ট করার জন্য শ্রীশ্রী জগন্নাথ তাকে 'আজ্ঞা মালা' (সম্মতির মালা) উপহার দেন। মহালক্ষ্মীকে ক্রুদ্ধ দেখে সেবকেরা তখন গুন্ডিচা মন্দিরের প্রদান দরজাটা বন্ধ করে দেন। তখন শ্রীমতি মহালক্ষ্মী নকচন দ্বার দিয়ে প্রধান মন্দিরে ফিরে আসেন।
একটি স্বতন্ত্র প্রথা প্রচলিত আছে যে, মহালক্ষ্মী তার অন্যতম অনুচরকে জগন্নাথের রথের 'নন্দী ঘোষ' একটি বিশেষ অংশ ধ্বংস বা ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দেন।
হেরা পঞ্চমীর ইতিহাস
জগন্নাথ মন্দিরের হেরা পঞ্চমী উৎসবের উল্লেখ পাওয়া যায় স্কন্দপুরাণে। মন্দিরের ইতিহাস অনুসারে, এই উৎসব আরম্ভ হয়েছিল কপিলেন্দ্র রাজার রাজত্বের সময়। মাদলা পাঁজি অনুসারে, রাজা কপিলেন্দ্র দেব সোনার মহালক্ষ্মী প্রতিমা গড়িয়ে বর্তমান উপায়ে উৎসবটির প্রচলন ঘটান।