বর্ণপ্রথা কী - বর্ণপ্রথা নিয়ে শাস্ত্রে কী বলা হয়েছে?
'বর্ণপ্রথা' নামে ধর্মগ্রন্থ সমূহে কোন শব্দ নেই। আছে ‘বর্ণাশ্রম’। অর্থাৎ আমরা যে বর্ণপ্রথা নামক শব্দের সাথে পরিচিত সেটি প্রকৃতপক্ষে 'বর্ণাশ্রম' হবে।শাব্দিক অর্থ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় ‘বর্ণ’ শব্দটি এসেছে ‘Vrn’ থেকে; যার অর্থ ‘to choose’ বা পছন্দ করা অর্থাৎ পছন্দ অনুযায়ী আশ্রম বা পেশা নির্ধারণ করা। কালের পরিবর্তনে বর্ণাশ্রম হয়ে গেছে বর্ণ প্রথা!
নিরুক্তে বলা হয়েছে,
'বর্ণো বৃণোতেঃ' (নিরুক্ত ২|৩) অর্থাৎ বর্ণ শব্দটি 'বৃ' ধাতু দ্বারা নিষ্পন্ন।
অর্থাৎ 'বৃ' ধাতু থেকে নিষ্পন্ন বর্ণ শব্দটি ধাত্বার্থক ব্যূৎপত্তিগত অর্থ দেখলেই বোঝা যায় বর্ণ শব্দটি বরণ করে নেওয়া (To Choose)। অর্থাৎ নিজে বেছে নেওয়া অর্থ প্রকাশ করে। অর্থাৎ নিজের ইচ্ছায় যে ব্রত পছন্দ করে নেওয়া হয় তাকেই বর্ণ বলে।
সনাতনধর্মের শাস্ত্র মতে, সমাজে চারটি বর্ণপ্রথার কথা আলোচিত আছে। সেগুলো হলোঃ
১. ব্রাহ্মণ (বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকান্ডে নিয়োজিত),
২. ক্ষত্রিয় (প্রতিরক্ষা,যুদ্ধ-বিগ্রহ) ,
৩. বৈশ্য (অর্থনীতি ও পশুপালনাদি) ও
৪. শূদ্র (সেবামূলক কাজকর্ম)।
ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র কার জন্ম কোথায় থেকে?ব্রহ্মার বদন থেকে ব্রাহ্মণের জন্ম। বাহু যুগল থেকে ক্ষত্রিয়ের জন্ম । উরুতে জন্ম নিল বৈশ্য এবং শূদ্রের জন্ম হল ব্রহ্মার চরণ থেকে।
প্রকৃত অর্থ হচ্ছে:
- সমাজে ব্রাহ্মণ বা বুদ্ধিজীবিরা তৈরি করে মস্তিষ্ক বা মাথা বা মুখ যা চিন্তা করে এবং বলে।
- ক্ষত্রিয় বা রক্ষণকর্মীরা তৈরি করে হাত যা রক্ষা করে।
- বৈশ্য বা উৎপাদনকারীরা এবং ব্যবসায়ীরা তৈরি করে উরু যা ভার বহন করে এবং যত্ন করে (লক্ষ্য করুন উরুর হাড় অথবা উর্বাস্থি তৈরি করে রক্ত এবং এ হচ্ছে দেহের সবচেয়ে শক্ত হাড়)। অথর্ববেদে উরুর বদলে "মধ্য" শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে যার অর্থ বোঝায় পাকস্থলী এবং দেহের মধ্যের অংশ।
- শূদ্র বা শ্রমিকেরা তৈরি করে পা যা কাঠামোটিকে দাঁড় করায় এবং দেহকে চলতে সক্ষম করে।
ধর্মগ্রন্থে বর্ণ প্রথাঃ
✅ যে ঈশ্বরের প্রতি গভীরভাবে অনুরক্ত, অহিংস, সৎ, নিষ্ঠাবান, সুশৃঙ্খল, বেদ প্রচারকারী, বেদ জ্ঞানী সে ব্রাহ্মণ।
ঋগবেদ ৭.১০৩.৮✅ দৃঢ়়ভাবে আচার পালনকারী, সৎকর্মের দ্বারা শুদ্ধ, রাজনৈতিক জ্ঞান সম্পন্ন, অহিংস,ঈশ্বর সাধক, সত্যের ধারক ন্যায়পরায়ণ, বিদ্বেষমুক্ত ধর্মযোদ্ধা, অসৎ এর বিনাশকারী সে ক্ষত্রিয়।
ঋগবেদ ১০.৬৬.৮✅ দক্ষ ব্যবসায়ী দানশীল চাকুরীরত এবং চাকুরী প্রদানকারী।
অথর্ববেদ ৩.১৫.১✅ যে অদম্য, পরিশ্রমী, অক্লান্ত জরা যাকে সহজে গ্রাস করতে পারেনা, লোভমুক্ত কষ্টসহিষ্ণু সেই শূদ্র।
ঋগবেদ ১০.৯৪. ১১
৪টি বর্ণাশ্রম সম্পর্কে গ্রন্থে উল্লেখ আছে-
ঋগবেদ ১.১১৩.৬
"একজন জ্ঞানের উচ্চ পথে(ব্রাহ্মণ), অপরজন বীরত্বের গৌরবে(ক্ষত্রিয়), একজন তার নির্দিষ্ট লক্ষ্যে(পেশা ভিত্তিক), আরেকজন সেবার পরিশ্রমে(শূদ্র)। সকলেই তার ইচ্ছামাফিক পেশায়, সকলের জন্যই ঈশ্বর জাগ্রত।"
ঋগবেদ ৯.১১২.১
একেকজনের কর্মক্ষমতা ও আধ্যাত্মিকতা একেক রকম আর সে অনুসারে কেউ ব্রাহ্মণ, কেউ ক্ষত্রিয়, কেউ বৈশ্য এবং কেউ শূদ্র।
শ্রীমদ্ভগবতগীতা ৪/১৩
আমি গুণ ও কর্মের বিভাগ অনুসারে চারিবর্ণের (ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র) সৃষ্টি করিয়াছি।
শ্রীমদ্ভগবতগীতা ১৮/৪১
মানুষের স্বভাবজাত গুণ অনুসারে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্রদের কর্ম সমূহ বিভক্ত করা হয়েছে।
অর্থাৎ, স্বভাবজাত গুণ অনুসারে কর্ম সমূহ বিভক্ত করা হয়েছে, জন্ম অনুসারে মানুষকে বিভক্ত করা হয় নি।
বৈদিক ইতিহাসে বর্ণপ্রথা
‘বর্ণাশ্রম’ হলো নির্ভেজাল যোগ্যতা অনুযায়ী ব্যবস্থা। ডাক্তার এর ছেলে যেমন ডাক্তার হবেই এমন কোনো কথা নেই।ডাক্তার এর ঘরে জন্ম নিলেই এম.বি.বি.এস এর সার্টিফিকেট যেমন পাওয়া যায়না, ঠিক তেমন ব্রাহ্মণ এর ঘরে জন্ম নিলেই ব্রাহ্মণ হওয়া যায় না। বৈদিক বর্ণাশ্রমও একই। বৈদিক ইতিহাসে অনেক উদাহরণ রয়েছে এ ধরনের-
১. ঋষি ঐতরেয়া ছিলেন দাস বা অপরাধীর পুত্র কিন্তু তিনি পরিণত হন শীর্ষ ব্রাহ্মণদের মধ্যে একজন এবং লেখেন ঐতরেয়া ব্রাহ্মন এবং ঐতরেয়াপোনিষদ। ঐতরেয়া ব্রাহ্মনকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরা হয় ঋগবেদ বোঝার জন্য।
২. ঋষি ঐলুশ জন্মেছিলেন দাসীর ঘরে যিনি ছিলেন জুয়াখোর এবং নিচু চরিত্রের লোক। কিন্তু এই ঋষি ঋগবেদের উপর গবেষণা করেন এবং কিছু বিষয় আবিষ্কার করেন। তিনি শুধুমাত্র ঋষিদের দ্বারা আমন্ত্রিতই হতেন না এমনকি আচার্য্য হিসেবেও অধিষ্ঠিত হন। (ঐতরেয়া ব্রহ্ম ২.১৯)
৩. সত্যকাম জাবাল ছিলেন এক পতিতার পুত্র যিনি পরে একজন ব্রাহ্মণ হন।
৪. প্রীষধ ছিলেন রাজা দক্ষের পুত্র যিনি পরে শূদ্র হন। পরবর্তীতে তিনি তপস্যা দ্বারা মোক্ষলাভ করেন। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.১.১৪) যদি তপস্যা শূদ্রদের জন্য নিষিদ্ধ হতো যেমনভাবে উত্তর রামায়ণের নকল গল্প বলে, তাহলে প্রীষধ কিভাবে তা করল?
৫. নবগ, রাজা নেদিস্থের পুত্র পরিণত হন বৈশ্যে। তার অনেক পুত্র হয়ে যান ক্ষত্রিয়। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.১.১৩)
৬. ধৃষ্ট ছিলেন নবগের (বৈশ্য) পুত্র কিন্তু পরে ব্রাহ্মণ হন এবং তার পুত্র হন ক্ষত্রিয়। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.২.২)
৭. ভাগবত অনুসারে অগ্নিবেশ্য ব্রাহ্মণ হন যদিও তিনি জন্মনেন এক রাজার ঘরে।
৮. রাথোটর জন্ম নেন ক্ষত্রিয় পরিবারে এবং পরে ব্রাহ্মণ হন বিষ্ণু পুরাণ ও ভাগবত অনুযায়ী।
৯. হরিৎ ব্রাহ্মণ হন ক্ষত্রিয়ের ঘরে জন্ম নেয়া সত্ত্বেও। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.৩.৫)
১০. শৌনক ব্রাহ্মণ হন যদিও ক্ষত্রিয় পরিবারে জন্ম হয়। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.৮.১) এমনকি বায়ু পুরাণ, বিষ্ণু পুরাণ ও হরিবংশ পুরাণ অনুযায়ী শৌনক ঋষির পুত্রেরা সকল বর্ণের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। একই ধরনের দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় গ্রীতসমদ, বিতব্য ও বৃৎসমতির মধ্যে।
১১. মাতঙ্গ ছিলেন চন্ডালের পুত্র কিন্তু পরে ব্রাহ্মণ হন।
১২. রাবণ জন্মেছিলেন ঋষি পুলৎস্যের ঘরে কিন্তু পরে রাক্ষস হন।
১৩. প্রবৃদ্ধ ছিলেন রাজা রঘুর পুত্র কিন্তু পরে রাক্ষস হন।
১৪. ত্রিশঙ্কু ছিলেন একজন রাজা যিনি পরে চন্ডাল হন।
১৫. বিশ্বামিত্রের পুত্রেরা শূদ্র হন। বিশ্বামিত্র নিজে ছিলেন ক্ষত্রিয় যিনি পরে ব্রাহ্মণ হন।
১৬. বিদুর ছিলেন এক চাকরের পুত্র কিন্তু পরে ব্রাহ্মণ হন এবং হস্তিনাপুর রাজ্যের মন্ত্রী হন।
“শূদ্র” শব্দটি বেদে দেখা গেছে প্রায় ২০ বারের মতো। কোথাও এটি অবমাননাকরভাবে ব্যবহৃত হয়নি। কোথাও বলা হয়নি শূদ্রেরা হলো অস্পর্শযোগ্য,বেদ শিক্ষা হতে অনুনোমোদিত, অন্যান্য বর্ণের তুলনায় নিম্ন অবস্থানের, যজ্ঞে অনুনোমোদিত।
বেদে বলা হয়েছে শূদ্র বলতে বোঝায় কঠিন পরিশ্রমী ব্যক্তি। (তপসে শূদ্রম্ – যজুর্বেদ ৩০.৫) একারণেই পুরুষ সুক্ত এদের ঘোষনা দিয়েছে মানব সভ্যতার কাঠামো হিসেবে। এজন্যেই পবিত্র বেদ ঘোষণা করেছে সাম্যের বানী-
অজ্যেষ্ঠাসো অকনিষ্ঠাস এতে সং ভ্রাতারো তাবৃধুঃ ।
সৌভগায় যুবা পিতা স্বপা রুদ্র এযাং সুদুঘা পুশ্নিঃ সুদিনা মরুদ্ভঃ ॥ (ঋগবেদ ৫.৬০.৫)
অনুবাদঃ কর্ম ও গুণভেদে কেউ ব্রাহ্মণ, কেউ ক্ষত্রিয়, কেউ বৈশ্য, কেউ শুদ্র। তাদের মধ্যে কেহ বড় নয় কেহ ছোট নয়।ইহারা ভাই ভাই। সৌভাগ্য লাভের জন্য ইহারা প্রযত্ন করে। ইহাদের পিতা তরুন শুভকর্ম ঈশ্বর এবং জননীরূপ প্রকৃতি। পুরুষার্থী সন্তানই সৌভাগ্য প্রাপ্ত হন।
বর্ণপ্রথা নিয়ে স্বয়ং পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গীতায় ৪র্থ অধ্যায় জ্ঞানযোগের ১৩ নং শ্লোকে বলেছেন-
চাতুৰ্বৰ্ণ্যং ময়া সৃষ্টং গুণকর্মবিভাগশঃ।
তস্য কর্তারমপি মাং বিদ্ধ্যকর্তারমব্যয়ম্ ৷৷ ৪/১৩ ৷৷
অনুবাদঃ প্রকৃতির তিনটি গুণ ও তাদের সঙ্গে সংযুক্ত কর্ম অনুসারে আমি মানবসমাজে চারটি বর্ণের সৃষ্টি করেছি। আমি এই প্রথার স্রষ্টা হলেও আমাকে অকর্তা এবং অব্যয় বলেই জানবে।
এই বিষয়ে গীতার গানঃ
চারি বর্ণ সৃষ্টি মোর গুণ কৰ্ম ভাগে ৷
যার যাহা গুণ হয় কহিব সে আগে ৷।
তথাপি সে নহি আমি গুণ কর্ম মাঝে ।
যদ্যপি নিয়ন্তা আমি সকলের কাজে ৷।
ভগবানই সব কিছুর স্রষ্টা, তাঁর থেকে সব কিছু সৃষ্টি হয়েছে; তিনি সব কিছু রক্ষা করেন, আবার প্রলয়ের পরে সব কিছু তাঁর মধ্যেই প্রবিষ্ট হয়। সমাজের চারটি বর্ণও তাঁরই সৃষ্টি। সমাজের সর্বোচ্চ বর্ণ সৃষ্টি হয়েছে শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন মানুষদের নিয়ে, যাদের পরিভাষায় বলা হয় ব্রাহ্মণ এবং তারা সত্ত্বগুণের দ্বারা প্রভাবিত। এর পরের বর্ণটি শাসক সম্প্রদায়, এদের পরিভাষায় বলা হয় ক্ষত্রিয় এবং এরা রজোগুণের দ্বারা প্রভাবিত। তার পরের বর্ণটি ব্যবসায়ী সম্প্রদায়, এদের বলা হয় বৈশ্য এবং এরা রজো ও তমো গুণের দ্বারা প্রভাবিত। তার পরের বর্ণটি শ্রমজীবী সম্প্রদায়, এদের বলা হয় শূদ্র এবং এরা তমোগুণের দ্বারা প্রভাবিত৷ ভগবান যদিও মানবসমাজে এই চারটি বর্ণ সৃষ্টি করেছেন,
তবুও তিনি সেগুলির কোনটিরই অন্তর্ভুক্ত নন। কারণ তিনি মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ জীবের মতো নন। মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ জীবেদের মধ্যে মানবজাতিও অন্যতম। প্রকৃতপক্ষে, মানবসমাজ যে কোনও পশুসমাজেরই মতো; কিন্তু মানুষকে পশুর স্তর থেকে প্রকৃত মানুষের স্তরে উন্নীত করবার জন্য ভগবান
এই চারটি বর্ণবিভাগ করেছেন, যাতে মানুষ পর্যায়ক্রমে ধীরে ধীরে কৃষ্ণভাবনাময় হতে পারে। গুণ অনুসারে মানুষের কর্ম নির্ধারিত হয়। তবে কৃষ্ণভাবনাময় ভক্ত ব্রাহ্মণের থেকেও উত্তম। যদিও গুণগতভাবে ব্রাহ্মণের ব্রহ্ম বা পরম সত্যের জ্ঞানসম্পন্ন হওয়া উচিত, কিন্তু তাদের মধ্যে অধিকাংশই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নির্বিশেষ ব্রহ্মজ্যোতির উপাসক। কিন্তু যিনি ব্রাহ্মণের সীমিত জ্ঞানের পরিধি অতিক্রম করে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সম্বন্ধে জ্ঞান-লাভ করেন, তিনি কৃষ্ণভাবনাময় ভক্তে পরিণত হন বা বৈষ্ণব পদবাচ্য হন। কৃষ্ণভাবনাময় জ্ঞান রাম, নৃসিংহ, বরাহ আদি সব কটি ভগবদাবতারের তত্ত্ব সমন্বিত। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যেমন সমাজের চারটি বর্ণের অতীত, কৃষ্ণভাবনায় নিয়োজিত তাঁর ভক্তও তেমন এই বর্ণবিভাগের অতীত, এমনকি দেশ, জাতি, কুলাদি বিচারেরও অতীত।
পরিশেষে,
মানুষের সৃষ্ট এ জাত ও পদবী বৈষম্য একজন মানুষের সাথে অন্য মানুষের মধ্য দূরত্ব সৃষ্টি করেছে। এতে হিন্দু সমাজের হয়েছে অপূরণীয় ক্ষতি। ধর্মান্তরিত হয়েছে অসংখ্য নিম্নশ্রেণী ও বর্ণের হিন্দুরা। রাস্তায় যেমন সকল যানবাহন একই গতিতে চলতে পারে না, তেমনি সমাজের সকল মানুষও সম আর্থিক সচ্ছলতায় চলতে পারে না। তাই সমাজের কেউ ডাক্তার, কেউ প্রকৌশলী, কেউ শিক্ষক, কেউ দারোয়ান, কেউবা সুইপার। নিজের যোগ্যতার উৎকর্ষ সাধন করতে পারলে একজন কর্মকর্তা যেমন পদন্নোতি পান, তেমনি আমরাও নিজ নিজ বর্ণে দক্ষতা অর্জন করে উচ্চাসনে বসতে পারি। একজন মানুষ জন্মসূত্রে নয়, বরং তার কর্মগুণে স্বীকৃতি লাভ করে। কোন বর্ণ উঁচু আর কোন বর্ণ নিচু ধর্মগ্রন্থে তা কোথাও উল্লেখ নেই। বৈদিক সমাজ সকল মানুষকে একই জাতি বা গোষ্ঠী হিসেবে গণ্য করে, শ্রমের মর্যাদা বহাল রাখে, এবং সকল মানুষের জন্য সমান সুযোগ প্রদান করে যাতে তারা নিজ নিজ বর্ণ গ্রহণ করতে পারে। এসব কুপ্রথা সমাজ থেকে দূর করে, আমরা যেন সকলে এক হয়ে একটি পরিবারের ন্যায় একতাবদ্ধ হতে পারি।
লেখায় কোন ত্রুটি থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন, নমস্কার। হরেকৃষ্ণ 🙏