শ্রীশ্রী জগন্নাথ, বলদেব, সুভদ্রার ৩টি রথ সম্পর্কে জানা-অজানা কিছু তথ্য
প্রথমেই বলে নিই, রথ ছাড়া রথযাত্রা আমরা কল্পনাও করতে পারি না।
একটা রথের বিভিন্ন অংশ থাকে। সংক্ষেপে আমরা সেগুলোর সাথে আগে পরিচিত হয়ে নিই। রথ যে নির্মাণ করেন তাকে বলা হয় রথকর। আর যে রথ চালনা করে তাকে বলা হয় রথযুক। রথের চাকা কে বলা হয় রথচরণ। পুরীতে যে রথ উৎসব হয় সেখানে প্রধানত তিনটি রথ থাকে। আসুন এবারে জেনে নিই সেই রথ তিনটি সম্পর্কে।
আমরা জানতে পারবোঃ
- তালধ্বজ রথ সম্পর্কে
- দর্পদলন রথ সম্পর্কে
- নন্দীঘোষ রথ সম্পর্কে
মানব দেহ গঠিত ২০৬টি হাড় দিয়ে। পুরীর রথও নির্মিত হয় ২০৬ টিই কাঠ দিয়ে। সেই কাঠের কাঠামোয় প্রাণ দেন রথে অধিষ্ঠিত দেবতা। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে বোঝানো হয় মানব দেহও রথের মতোই কাঠামো মাত্র। অন্তরাত্মাই সেই রথের আসল চালক।
তালধ্বজ
প্রথমে যাত্রা শুরু করে বড় ভাই বলভদ্রের রথ। এই রথের নাম তালধ্বজ। এই রথের উচ্চতা ৪৩ ফুট ৩ ইঞ্চি। চাকা ১৪টি। এই ১৪ টি চাকায় ধরা থাকে ১৪ টি ভুবনের কথা। পরিধি ৬ ফুট ৬ ইঞ্চি। অশ্ব কালো রঙের। চারটি অশ্বের নাম যথাক্রমে ত্রিব্রা, ঘোরা, দীর্ঘশর্মা এবং স্বর্ণাভা। বলভদ্রের রথের সারথির নাম মাতলি। রথ যে রশির সাহায্যে টানা হয় সেই রশির নাম বাসুকিনাগ এবং রথের উপরে যে পতাকা রয়েছে তার নাম উন্নয়নী। জগন্নাথের রথের পতাকার নাম ত্রৈলোক্য মোহিনী।
দর্পদলন
এরপরেই যাত্রা যাত্রা করে বোন সুভদ্রার রথ। সুভদ্রার রথের নাম দর্পদলন। রথের উচ্চতা ৪৩ ফুট ৩ ইঞ্চি। এতে থাকে ১২টি চাকা। সুভদ্রার রথ, দর্পদলন বা পদ্মধ্বজের ১২ টি চাকা বোঝায় ১২ মাসই ভজনের সময়। চাকার পরিধি ৬ ফুট ৮ ইঞ্চি। এই রথের রং কালো এবং লাল। রথের অশ্ব লাল রঙের। চারটি অশ্বের নাম যথাক্রমে রোচিকা, মোচিকা, জিতা এবং অপরাজিতা। সুভদ্রার সারথির নাম অর্জুন। সুভদ্রার রথের রশির নাম স্বর্ণচূড় নাগিনী। সুভদ্রা রথের পতাকার নাম নদাম্বিকা।
নন্দীঘোষ
সর্বশেষে থাকে শ্রী কৃষ্ণ বা জগন্নাথদেবের রথ। রথটির নাম নন্দীঘোষ। পতাকায় কপিরাজ হনুমানের মূর্তি আঁকা রয়েছে তাই এই রথের আর একটি নাম কপিধ্বজ। রথের সারথির নাম দারুকা। এই রথের উচ্চতা ৪৪ ফুট ২ ইঞ্চি। রথে থাকে ১৬ টি চাকা। এই ১৬ টি চাকার একেকটি দশ ইন্দ্রিয় আর ছয় রিপুর প্রতিনিধিত্ব করে। চাকার পরিধি ৬ ফুট ৬ ইঞ্চি। অশ্বের রং সাদা। চারটি অশ্বের নাম যথাক্রমে নাম শঙ্খ, বলাহক, শ্বেতা এবং হরিদশ্ব। জগন্নাথের রথের রশির নাম শঙ্কচূড়।
এছাড়াও এই পবিত্র রথযাত্রাকে ঘিরে ভক্তদের মাঝে নানা লোকবিশ্বাস ও কাহিনী প্রচলিত আছে।
চলুন জেনে নিই...